ভারতের মহিলাদের জুনিয়র হকি দল (India Women’s Junior Hockey Team) নামিবিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল এক দাপুটে ভঙ্গিতে। প্রতিপক্ষকে একেবারে কোণঠাসা করে ১৩-০ ব্যবধানে জিতে ভারতের যুব দল শুধু তিন পয়েন্টই সংগ্রহ করল না, বরং নারী জুনিয়র বিশ্বকাপ হকিতে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের নজিরও গড়ে ফেলল। ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতীয় খেলোয়াড়রা বল নিয়ন্ত্রণে একচেটিয়া কর্তৃত্ব স্থাপন করে। প্রায় পুরো ম্যাচ জুড়েই বল ছিল নামিবিয়ার সর্কলে বা তার আশেপাশে, ফলে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ বারবার চাপে পড়ে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!তবে গোলের খাতা খুলতে ভারতের কিছুটা সময় লেগেছিল। ম্যাচের দশম মিনিটে সাক্ষী রানা ভারতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন। সেই গোলের ঠিক দু’মিনিট পরে কনিকা সিওয়াচ ব্যবধান বাড়িয়ে ফেলেন ২-০ তে। প্রথম কোয়ার্টারের শেষ দিকে ভারতের আক্রমণের ঝড় আরও গতি পায়। ১৪তম মিনিটে মাত্র কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে দুই গোল করেন বিনিমা ধান এবং সোনম, যার ফলে প্রথম কোয়ার্টার শেষ হতেই নামিবিয়া ০-৪ ব্যবধানে অনেকটাই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। প্রতিপক্ষের রক্ষণ দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং ভারতীয় দল সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আক্রমণ চালাতে থাকে নির্দয় ভঙ্গিতে।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারেও ভারত একই ছন্দ বজায় রাখে। দ্রুত পাস, চওড়া খেলায় পরিবর্তন, সার্কেলে ধারাবাহিক পেনিট্রেশন—সব মিলিয়ে নামিবিয়া যেন ভারতীয় দলের বহুমুখী আক্রমণ আটকাতে ব্যর্থ হয়। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই ভারতের গোলসংখ্যা দাঁড়ায় ৭-০। হিনা বানু এবং কনিকা সিওয়াচ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দলের বিশাল ব্যবধানে জয়ের ভিত্তি আরও দৃঢ় করে তোলেন। সাক্ষী রানার পাশাপাশি সাক্ষী শুক্লা এবং ইশিকাও-ও গোলের তালিকায় নাম লেখান।
দ্বিতীয়ার্ধেও ভারত থেমে থাকেনি। তৃতীয় কোয়ার্টার থেকে শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত ভারত একই তীব্রতায় আক্রমণ চালিয়ে যায়। নামিবিয়ার রক্ষণ ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে থাকে এবং গোলরক্ষক যতই চেষ্টা করুন না কেন, ভারতীয়দের গোল বন্যা আটকানো সম্ভব হয়নি। ম্যাচের শেষ মিনিটেও মনীষা গোল করে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন।
শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন থামে ১৩-০ তে—একটি নিখুঁত, নিয়ন্ত্রিত এবং অত্যন্ত আগ্রাসী পারফরম্যান্সের পর। ভারতের জুনিয়র মহিলা হকি দলের জন্য এই জয় শুধু বড় জয়ই নয়, বরং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্বকাপে পরবর্তী ম্যাচগুলোর আগে এক শক্তিশালী বার্তাও। শুরুতেই এমন প্রভাবশালী পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে ভারতের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করেছে।
