মুম্বইয়ের বিনোদন দুনিয়ায় পাপারাৎজি সংস্কৃতি বহু দিন ধরেই প্রচলিত। শহরের বিমানবন্দর, রেস্তোরাঁ, প্রিমিয়ার শো বা যেকোনও গ্ল্যামারাস অনুষ্ঠানের বাইরে প্রায়ই দেখা যায় ক্যামেরা হাতে বহু পাপারাৎজি দাঁড়িয়ে আছেন, তারকাদের এক ঝলক ক্যামেরাবন্দি করতে। তাঁদের তোলা ছবি কিংবা ভিডিও মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কখনও কখনও তারকারা নিজেরাই এই প্রচারের সুফল পান—নতুন প্রকল্প, ফ্যাশন স্টেটমেন্ট বা ব্যক্তিগত মুহূর্তের কারণে তাঁরা আলোচনায় চলে আসেন। কিন্তু সব তারকাই এই অতিরিক্ত নজরদারি পছন্দ করেন না। বিশেষ করে যাঁরা ব্যক্তিজীবনকে আলোচনার বাইরে রাখতে চান, তাঁদের কাছে এই পাপারাৎজি সংস্কৃতি যথেষ্ট বিরক্তিকর।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!বলিউডের অভিজ্ঞ অভিনেত্রী ও সমাজসেবী জয়া বচ্চন (Joya Bachan)বহুবার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তিনি এই অনধিকারচর্চা মোটেও সহ্য করতে পারেন না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক বা পাপারাৎজিদের আচরণ নিয়ে তাঁর অসন্তুষ্টির কথা আগেও শোনা গেছে। সম্প্রতি মুম্বইয়ের একটি ইভেন্টে যোগ দেওয়ার সময় আবারও পাপারাৎজিদের সামনে পড়েন তিনি। তাঁদের লক্ষ্য করে জয়া তীব্রভাবে সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, অনেকেই নোংরা, অগোছালো পোশাক পরে শুধু হাতে ক্যামেরা বা ফোন নিয়ে হাজির হন, আর ভাবেন তাঁরা সাংবাদিক। তাঁর মতে, সাংবাদিকতা একটি শাস্ত্র, যার জন্য আলাদা করে অধ্যয়ন, প্রশিক্ষণ এবং নৈতিকতা প্রয়োজন। শুধুমাত্র ছবি তোলার যন্ত্র থাকলেই কেউ সাংবাদিক হয়ে যান না।
জয়ার এই মন্তব্য স্বাভাবিক ভাবেই পাপারাৎজি মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। মুম্বইয়ের বহু পাপারাৎজি তাঁর এই মন্তব্যকে অসম্মানজনক বলে মনে করেছেন। তাঁদের মতে, তাঁরা বছরের পর বছর ধরে তারকাদের ছবি তুলে জীবিকা নির্বাহ করছেন, এবং তাঁদের কাজও মিডিয়া জগতেরই একটি অংশ। এই কারণেই এই সম্প্রদায়ের একাংশ ক্ষোভে ফুঁসছে। গুঞ্জন উঠেছে—জয়ার মন্তব্যের প্রতিবাদে তাঁরা বচ্চন পরিবারকে পুরোপুরি বয়কট করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে অমিতাভ, জয়া, অভিষেক, ঐশ্বর্য বা পরিবারের অন্য সদস্যদের কোনও ছবি বা ভিডিও তাঁরা নাকি তুলবেন না।
তবে এই বয়কট আদৌ কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে এখনও স্পষ্টতা নেই। মুম্বইয়ের পাপারাৎজি সংস্কৃতি এতটাই জনপ্রিয় ও বিস্তৃত যে কোনও বড় তারকা পরিবারকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা বাস্তবে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সময়ই বলে দেবে এই সমালোচনা অস্থায়ী উত্তেজনা, না কি দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের সূত্রপাত।
