রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের দীর্ঘ অভিনয়যাত্রা নিয়ে নির্ভয়ে কথা বললেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন(Aishwarya Rai Bachchan)। সৌদি আরবের এই আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট করে জানালেন—ভয়, অনিশ্চয়তা বা নিরাপত্তাহীনতা কোনওদিনই তাঁর সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেনি। বরং শুরু থেকেই তিনি এমন প্রকল্পই বেছে নিয়েছেন, যেগুলি তাঁর কাছে সত্যিকারের তাৎপর্য বহন করত।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!বিশ্বসুন্দরীর মুকুট জয়ের পর যখন তিনি চলচ্চিত্রজগতে প্রবেশ করেন, তখন চারদিকে প্রত্যাশা ছিল এক জাঁকজমকপূর্ণ লঞ্চের। কিন্তু সে পথে হাঁটেননি তিনি। তাঁর কেরিয়ার শুরু হয় মণি রত্নমের তামিল চলচ্চিত্র ইরুভার দিয়ে—যেখানে তাঁর উপস্থিতির চেয়ে গল্পটাই ছিল কেন্দ্রীয় উপাদান। ঐশ্বর্য নিজেই জানান, প্রথম দিকে বহু মানুষ তাঁকে বলেছিলেন পরিস্থিতির চাপ, সময়ের চাহিদা এবং ইন্ডাস্ট্রির ধারা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে। তবে তিনি সেইসব ভাবনার বাইরে গিয়ে শুধুই হৃদয়ের নির্দেশ মেনেছেন, যদিও তাতে হয়তো প্রচলিত সাফল্যের নিশ্চয়তা ছিল না।
উৎসবের মঞ্চে তিনি বলেন, “আমি ভয় বা নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্ত নই—এটা আমার স্বভাবেরই অংশ।” তাঁর মতে, অনেক অভিনেতার ক্ষেত্রে বাইরের মতামত সিদ্ধান্ত বদলে দেয়, কিন্তু তিনি কখনও সেই প্রবাহে ভেসে যাননি। এখন পিছনে তাকালে বুঝতে পারেন—শুরু থেকেই তিনি নিজের কাজের ক্ষেত্রে এক ধরনের সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখেছিলেন, যদিও তা সে সময় পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারেননি।
ইরুভার–এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, মণি রত্নম তাঁকে প্রথমেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এটি তাঁর ‘গ্র্যান্ড লঞ্চ’ নয়—এটি গল্পনির্ভর একটি চলচ্চিত্র। আর এই ধারণাই তাঁর কাজের দর্শনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে মিলেছিল।
আলোচনায় আসে দেবদাস–এর পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলিও। সঞ্জয় লীলা বনশালির সেই বিশাল সাফল্যের পর চারদিক থেকে প্রশ্ন উঠেছিল—এরপর কোন আরও ‘বড়’ প্রজেক্টে তাঁকে দেখা যাবে? কিন্তু বক্স অফিসের হিসেব না ভেবেই তিনি বেছে নেন ঋতুপর্ণ ঘোষের সংবেদনশীল বাংলা ছবি চোখের বালি। ঐশ্বর্যের মতে, সাফল্যের চাপের মধ্যেও গল্পের শক্তিই তাঁকে টেনেছিল।
তিনি জানান, তাঁর কেরিয়ার কোনও সোজা পথে বাধা নয়—পূর্বানুমান নয়, গল্পই তাঁর দিশারি। দীর্ঘ যাত্রায় পাওয়া ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও অর্থবহ গল্পে কাজ করতে চান, আর প্রয়োজন হলে ‘না’ বলার স্বাধীনতাকেও গুরুত্ব দেন।
এ মুহূর্তে তিনি নতুন কোনও ছবিতে সই করেননি। ২০২৩-এর পন্নিয়িন সেলভান ২–এর পর আপাতত আন্তর্জাতিক উৎসব ও ফ্যাশন মঞ্চেই ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তবে তিনি যখনই পর্দায় ফিরবেন, তা হবে আবারও শুধুই একটি অর্থপূর্ণ গল্পের টানে।
