মনের মানুষের সঙ্গে দু’জন দু’জনের কাছে এলে স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক ঘনিষ্ঠতা (Intimacy) তৈরি হয়। যৌনতা মানুষের প্রাকৃতিক চাহিদা—দাম্পত্য সম্পর্কেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তাই ঘনিষ্ঠতায় অনীহাই বরং অস্বাভাবিক বলে মনে করেন বহু বিশেষজ্ঞ। তবে সাম্প্রতিক কিছু সমীক্ষা জানাচ্ছে, নতুন প্রজন্মের (জেন জি) মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহ দ্রুত কমছে। তাঁরা সম্পর্কে বিশ্বাসী, আবেগের সংযোগকে গুরুত্ব দেন, কিন্তু যৌনতায় অনেকটাই নিরাসক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা উদ্বেগজনক।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!যাঁদের শারীরিক সম্পর্কের প্রয়োজন তুলনায় কম, অথচ মানসিক সংযোগের উপর সম্পর্ক টিকে থাকে—তাঁদের ‘গ্রেসেক্সুয়াল’ বলা হয়। এঁরা সঙ্গীর সঙ্গে হাত ধরে থাকা, আবেগ ভাগ করে নেওয়াকেই বেশি গুরুত্ব দেন। মাঝে মাঝে ঘনিষ্ঠ হলেও তা খুব স্বল্প সময়ের জন্য। আবেগগত যোগসূত্র তৈরি না হলে তাঁরা কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে পারেন না। এমনকি তাঁদের জন্য আলাদা অনলাইন ফোরামও রয়েছে, যার সদস্য সংখ্যা ৮,৩০০-এরও বেশি।
এই যৌন অনীহার পিছনে একাধিক কারণ দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, বর্তমান সময়ে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে অনেক। ছোটবেলা থেকেই প্রতিযোগিতার চাপ সামলাতে হয় জেন জেডদের। ফলে মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদ তৈরি হয়। এই মানসিক চাপ যৌন আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে দেয়।
দ্বিতীয়ত, চেহারা নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা। সমীক্ষা বলছে, জেন জেড নিজেদের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে অত্যন্ত খুঁতখুঁতে। কাঙ্ক্ষিত মানের চেহারা না পেলে মন খারাপ বা হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। এর প্রভাবে আত্মবিশ্বাস কমে যায়, যার ফলে ঘনিষ্ঠতা এড়ানোর প্রবণতা বাড়ে।
তৃতীয়ত, অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার। ডিজিটাল দুনিয়ায় ডুবে থাকার ফলে বাস্তব সম্পর্কের দিকে মনোযোগ কমে যাচ্ছে। নিজের কাছের মানুষকে সময় দেওয়ার অভ্যাসও দুর্বল হচ্ছে। এই দূরত্ব সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। ‘গ্রেসেক্সুয়াল’দের ক্ষেত্রে তো মানসিক বন্ধন না হলে শারীরিক সম্পর্ক হয়ই না।
অন্যদিকে অতিরিক্ত পর্ন দেখা থেকেও যৌন উত্তেজনা ও স্বাভাবিক যৌন আগ্রহ কমে যেতে পারে—এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি তরুণ প্রজন্মের যৌন আকাঙ্ক্ষা এভাবেই কমতে থাকে, ভবিষ্যতে জন্মহার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এটা জনসংখ্যা সংকট ও সামাজিক কাঠামোর উপর বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে।
