বিজনবাড়ি, লেপচাজগৎ বা সুখিয়াপোখড়ির মতো জায়গাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অফবিট ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে পরিচিত। প্রায় সব সিজনেই মানুষ ভিড় করেন সেখানে। তাই যদি একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতা চান, তবে ভ্রমণের তালিকায় রাখতে পারেন মংপং (Mongpong)—নিঃশব্দ, সবুজে মোড়া, এখনও তুলনামূলকভাবে পর্যটক-অস্পর্শ একটি পাহাড়ি গ্রাম।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!মংপংয়ের চারদিকে ছড়িয়ে আছে বিস্তীর্ণ চা-বাগান, যার মধ্য দিয়ে ভেসে আসে দুধসাদা মেঘ। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। লেপচা সম্প্রদায়ের বসতি হওয়ায় জায়গাটির নিজস্ব এক শান্ত, ধীর ছন্দ আছে। খুব বেশি হোমস্টে বা রিসর্ট নেই, ফলে জায়গাটি নিজের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রেখেছে। এখানে কয়েকদিন কাটালে স্থানীয়দের সাদামাটা জীবনধারা, উষ্ণ আতিথেয়তা এবং প্রকৃতির নির্জনতা আপনাকে এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে।
মংপংয়ের পরিবেশ অত্যন্ত মোলায়েম—ঢালু পাহাড়ি পথ ধরে হেঁটে বেড়ানো, নির্জন নদীর ধারে বসে প্রকৃতির শব্দ শোনা—এসবই ভ্রমণকে আরও শান্ত ও প্রশান্ত করে তোলে। কাছেই রয়েছে অতি পরিচিত তিস্তা নদী। নদীর ধারের খোলা প্রান্তর, পাহাড়ি প্রেক্ষাপট ও চা-বাগানের সবুজ মেলবন্ধন ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফারদের কাছে স্বপ্নের মতো। নদীর বুক ছুঁয়ে বয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস আর পাহাড়ি নীরবতা মনে গেঁথে থাকবে অনেকদিন।
স্থানীয় ছোট বাজারে মিলবে লেপচা হস্তশিল্প, রঙিন ঐতিহ্যবাহী কাপড়, পাট বা বেতের নানান সামগ্রী। এছাড়া আশেপাশের ছোট গ্রামগুলোতে গেলে স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।
মংপংয়ে বড় হোটেল খুব কম হলেও ছোট অতিথিশালা ও হোমস্টে রয়েছে। আর ভোরবেলার কুয়াশায় মোড়া প্রকৃতি এবং সূর্যোদয়ের সোনালি আলো পুরো পরিবেশকে ছবির মতো করে তোলে।
এখানে থাকার জন্য সবচেয়ে পরিচিত হলো বন দফতরের নেচার রিসর্ট – মংপং (WBFDC Nature Resort)। কাঠের কটেজগুলি বেশ বড় এবং দল বেঁধে থাকা যায়। সরকারি হওয়ায় আগেই বুকিং করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় তথ্য বন দফতরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ভ্রমণকারী এখানেই থাকেন।
এ ছাড়া আশেপাশে আরও কয়েকটি ছোট হোমস্টে রয়েছে, চাইলে সেখানে পৌঁছে দেখে নেওয়াও যায়।
