চার বছরের বিরতির পর ফিরে আসা ‘ফ্যামিলি ম্যান ৩’-এ সময়ের ছাপ স্পষ্ট। বয়স, দায়িত্ব, আবেগ— সবই বদলেছে শ্রীকান্ত তিওয়ারির(Srikant Tiwari) জীবনে। তবে অপরিবর্তিত একমাত্র জিনিস— দেশ আর পরিবার রক্ষার দায়বদ্ধতা। নতুন সিজন মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শক মহলে তুমুল আলোচনা। কারও মতে এটি আগের সিজনের চেয়েও শক্তিশালী, কারও কাছে কিছুটা কম টানটান। তবে অভিনয়, সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং থ্রিলার ভাব— সব মিলিয়ে একমুহূর্তও স্ক্রিন থেকে চোখ সরাতে দেয় না।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!এবারের গল্পের মূল মঞ্চ উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য নাগাল্যান্ড। এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে কাহিনি— দিল্লি, মুম্বই, মায়ানমার, ইসলামাবাদ হয়ে লন্ডন পর্যন্ত। নাগা উৎসবের দিনে বোমা বিস্ফোরণ দিয়ে সিরিজ শুরু, আর শেষ হয় শক্তিশালী অ্যাকশন সিকোয়েন্সে। স্থানীয় গান, পাহাড়-জঙ্গল থেকে আন্তর্জাতিক লোকেশন— প্রতিটি ফ্রেমে অনবদ্য দৃশ্যায়নই মূল আকর্ষণ।
গল্পের শুরুতে দেখা যায়, বিরোধী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু তার মধ্যেই কনভয়ে হামলা— নিহত হন এনআইএ প্রধান কুলকার্নি এবং নাগা নেতা ডেভিড। অল্পের জন্য বেঁচে যান শ্রীকান্ত। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা লন্ডন থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত এক সুচারু পরিকল্পনার জাল বুনছে, যাতে যুক্ত আছে মীরা এস্টন নামের এক তীক্ষ্ণদৃষ্টি ব্রোকার এবং নাগা ড্রাগ লর্ড রুকমা।
সমস্ত দোষ চাপানো হয় তরুণ নেতা স্টিফেনের উপর। শ্রীকান্ত বুঝতে পারে, এ হামলার নেপথ্যে রুকমাই আছে। ব্যক্তিগত প্রতিশোধের আগুনে রুকমাও তাকে শেষ করতে মরিয়া। কুলকার্নির মৃত্যুর দায় শ্রীকান্তের দিকেও ঘুরে আসে। তার পরিবারের উপর নামে বিপদের ছায়া— সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ থেকে শুরু করে সমাজের সন্দেহ, সবই ধাক্কা দেয়।
এই অস্থিরতার মধ্যে থেকেও শ্রীকান্তের পাশে থাকে তার কোর টিম— জে কে তালপাড়ে এবং আর্মি ইন্টেলিজেন্স অফিসার সালোনি ভাট। একই সঙ্গে শ্রীকান্তকে দেখা যায় আরও পরিণত পরিবারতান্ত্রিক রূপে— সন্তানদের বেড়ে ওঠা, দাম্পত্যের টানাপোড়েন, এবং সংকটের মুখে স্ত্রী-সন্তানকে আগলে রাখা।
অভিনয়ে মনোজ বাজপেয়ী স্বমহিমায় উজ্জ্বল। শরিব হাসমির কমেডি, গুল পনাগের দৃঢ়তা, নিমরত কওরের উপস্থিতি এবং জয়দীপ অহলওয়াতের বহুমাত্রিক অভিনয়— সবই সিরিজকে শক্তিশালী করেছে।
তবে জটিল প্লট, অতিরিক্ত টাইমলাইন বদল এবং একাধিক চরিত্র কখনও কখনও গতি কমিয়ে দেয়। ক্লাইম্যাক্সও কিছুটা অসম্পূর্ণ লাগে। তা সত্ত্বেও ‘ফ্যামিলি ম্যান ৩’ নিঃসন্দেহে শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন— আর এখান থেকেই শুরু সিজন ফোরের প্রতীক্ষা।
