সকালবেলায় তাড়াহুড়ো, বা ঘরে খাবার বানানোর মতো বাড়তি উপকরণ না থাকলে অনেক ভারতীয়ের নির্ভরযোগ্য বিকল্প হয়ে ওঠে ডিম-টোস্ট। সহজ, দ্রুত এবং পেটভরা এই সকালের খাবার নিয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে নানা আলোচনা—এটি সত্যিই কতটা স্বাস্থ্যকর? কেউ দাবি করছেন, ডিম-টোস্ট প্রোটিনে সমৃদ্ধ বলে এটি একদম আদর্শ ব্রেকফাস্ট (Breakfast)। আবার অনেকে মনে করেন, প্রতিদিন পাউরুটি খেলে রক্তে শর্করা ওঠানামা করতে পারে, বাড়তে পারে ওজনও। পুষ্টিবিদরা অবশ্য বলছেন—সমস্যা ডিম বা ডিম-টোস্ট নয়, বরং আমরা সেটি কী উপায়ে বানাচ্ছি, সেটাই আসল।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!পুষ্টিবিদ ডাঃ রোহিনী পাটিল জানান, প্রতিদিন ডিম-টোস্ট খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে, যদি উপকরণ ও পরিমাণের সঠিক ভারসাম্য রাখা যায়। ডিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, প্রয়োজনীয় ভিটামিন, কোলিন, সেলেনিয়াম—যা শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। কিন্তু পুরো খাবারের গুণ নষ্ট করে দিতে পারে পাউরুটির ধরণ এবং ব্যবহৃত তেলের পরিমাণ।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওমলেট বা ডিম নিজে কোনো সমস্যা তৈরি করে না, সমস্যা তৈরি করে সাদা পাউরুটি। সাদা পাউরুটি খুব দ্রুত গ্লুকোজে ভেঙে যায়, ফলে রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়ে এবং কিছুক্ষণ পরেই নেমেও যায়—ফলে খুব দ্রুতই আবার খিদে পায়। দীর্ঘদিন সাদা পাউরুটি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে—‘PURE Study’-র গবেষণাতেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। অন্যদিকে হোল-গ্রেন বা মাল্টিগ্রেন পাউরুটি ঠিক বিপরীত। এতে থাকে বেশি ফাইবার, ভিটামিন ও জটিল কার্বোহাইড্রেট, যা ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়। এতে রক্তে শর্করা স্থির থাকে ও খিদেও কম লাগে।
ডিমের উপকারিতা নিয়ে সংশয় নেই—সকালে প্রোটিন গ্রহণ দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, পেশি মজবুত করে এবং সারাদিন এনার্জি বজায় রাখে। সমস্যা দেখা দেয় রাস্তার দোকানের ডিম-টোস্টে—বারবার ব্যবহার করা তেল, অতিরিক্ত মাখন এবং নিম্নমানের পাউরুটি পুরো খাবারকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে।
সাদা পাউরুটির দুই টুকরো ও একটি ভাজা ডিম মিলে প্রায় ৪০০–৪৫০ ক্যালোরি পাওয়া গেলেও ফাইবার থাকে ২ গ্রামেরও কম। ফলে এনার্জি খুব স্থায়ী হয় না। কিন্তু যদি হোল-গ্রেন পাউরুটি ব্যবহার করা যায়, কম তেল দেওয়া হয় এবং অমলেটে টমেটো, পালং শাকের মতো সবজি যোগ করা হয়, তাহলে ডিম-টোস্ট হয়ে উঠতে পারে অনেক বেশি পুষ্টিকর।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ—ডিম-টোস্ট বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং সঠিক উপকরণের ব্যবহার ও সামান্য বুদ্ধিমত্তা আপনার নিয়মিত ব্রেকফাস্টকে করে তুলতে পারে ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর।
